মানুষের জিবনে চলার পথে অনেক অনেক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে অন্যতম একটি অভিজ্ঞতা হলো নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরতে পারা এবং একজন ভালো বক্তা হওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে পাবলিক স্পিকিং। এই পাবলিক স্পিকিং এ অনেকের অনেক ধরনের ভয় কাজ করে আবার অনেকে মনে করেন যে এটা সবার দ্বারা হবে না। যারা পারে এমনিতেই তারা পারে। আসলে এগুলো সত্যি নয়। যথেষ্ট পরিশ্রম করে নিয়ম মেনে চর্চা ও অনুশীলন করতে পারলে এবং সফলতা অর্জনের মানসিকতা থাকলেই হবে। একটু চেস্টাই আমাদের একজন ভালো বক্তা বানাতে পারে। নিচে ভালো বক্তা হওয়ার কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ

১। ভয় কাটানোঃ

সবার সামনে কথা বলার ভয়কে বলে গ্লোসোফোবিয়া, এটি অনেক মানুষেরই রয়েছে। চিন্তার কোনো কারন নেই এটি কাটিয়ে উঠা খুব সহজ, কিছুদিনের চর্চার মাধ্যমে আমরা এটিকে দূর করতে পারি। এ ক্ষেত্রে আপনি নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলা অনেক বেশি জরুরী। বেশি বেশি বন্ধু বানান এবং মানুষের সঙ্গে বেশি বেশি কথা বলুন। আপনি চাইলে আয়নার সামনে অনুশীলন করতে পারেন। যত বেশি অনুশীলন করবেন ভয় তত কমবে।

২। কথা বলার সময় দর্শকের কথা মাথায় রেখে কথা বলাঃ

কথা বলার সময় দর্শক বিভিন্ন ধরনের বয়স, পেশা, মতাদর্শের হয়। অধিকাংশ সময়ে সবাই যে ভুলটি করে, তা হলো সব বয়স, পেশার মানুষের জন্য একই ধরসের বক্তৃতা দেয়। শিশু ও পূর্বনয়স্ক ব্যক্তির বয়সের পার্থক্য থাকে। একজন ডাক্তার ও ব্যবসায়ীর মধ্যে কর্মক্ষেত্রের ভিন্নতা থাকার ফলে একই বক্তৃতা তাদের মধ্যে একই রকম উপলব্ধি তৈরি করতে পারে না। এ কারণে, একেকটি গ্রুপকে একেকভাবে বোঝানো প্রয়োজন। । এ কারণে দর্শক কোন ধরনের, কী ধরনের বিষয় তিনি বুঝাবেন কীভাবে ভালো বুঝালে তিনি বুঝবেন; কোন ধরনের কথা তার কাছে প্রাসঙ্গিক, এসব কিছু মাথায় রেখে বক্তৃতা প্রস্তুত করা এবং বুঝানোর উপায় নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

৩। বাচনভঙ্গিঃ

বিশ্বের সব শ্রেষ্ঠ পাবলিক স্পিকারের মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো অন্যদের প্রভাবিত করতে পারার ক্ষমতা। স্টিভ জবস, জন এফ কেনেডি, মারটিন লুথার কিং সবার মধ্যেই এই বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এর রহস্য হলো তাদের, বাচনভঙ্গি, শারীরিক ভাষা, শব্দচয়ন, স্বরের ওঠানামা। তারা এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করতেন যা মানুষের মধ্যে গেঁথে যায়, আকর্ষণীয় করে তোলে। পাশাপাশি তারা বাক্যের কিছু কিছু জায়গায় স্পেস দিতেন, স্বর ওঠানামা করার মাধ্যমে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতেন।

৪। গল্প বলাঃ

স্টোরি টেলিং বা বক্তৃতায় একটি গল্পের উপস্থিতি বক্তৃতাটিকেই বদলে দেয়। গল্প বক্তৃতার যেকোনো সময়েই বলা যায়, তবে শুরুতে বললে ভালো। গল্প বলার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জীবনের গল্প বা বক্তৃতার বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বাস্তবভিত্তিক গল্প বলা উচিত। বলার ক্ষেত্রে সাবলীল ভাষা ব্যবহার করা প্রয়োজন। কেননা এর মাধ্যমে সহজে দর্শকের অনুভূতি স্পর্শ করা সম্ভব এবং দর্শকের পক্ষেও গল্পের সঙ্গে বক্তৃতার বিষয়বস্তুর সম্পর্ক স্থাপন করা সহজ হয়।

৫। বেশি করে অনুশীলনঃ

অনুশীলন আপনার জনসাধারণের সামনে কথার দক্ষতাকে বাড়িয়ে দেবে। উপস্থাপনার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক অনেক বেশি দৃঢ় করবে। এতে করে আপনার বক্তব্য সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *