ঘুম না হলে কী করণীয়? 

ঘুম আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন এবং জরুরী একটি বিষয় কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে আমাদের অনেকেরই একটি সমস্যা দেখা দিচ্ছে ঘুম নিয়ে সেটি হচ্ছে রাতে ঘুমাতে চাইলেও ঘুম না আসা। অনেকে প্রশ্ন থাকে যে, রাতে দ্রুত ঘুমাতে চেস্টা করি কিন্তু ঘুম আসে না, আমার করনীয় কি? কিভাবে আমি রাতে পরিপূর্ন ভাবে ঘুমাতে পারি? এই সকল প্রশ্নের উত্তর এবং এই ঘুমের সমস্যা গুলোর সমাধান নিয়ে অনেক গুলো গুরত্বপূর্ন পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা হলো, এগুলো আপনাকে রাতে সঠিক ভাবে ঘুম আসতে সহায়তা করবেঃ

০১। ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে সকল ডিভাইস থেকে দূরে থাকুনঃ বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ মানুষই ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোবাইল ফোনটা হাতে নিয়ে স্ক্রল করতে থাকে। কিন্তু এই ডিভাইস গুলো থেকে ঘুমানোর অন্তত এক ঘন্টা আগে থেকে বিরত থাকা উচিত এবং বিছানা থেকে এই ডিভাইস গুলি অর্থাৎ মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার দূরে রাখা উচিত।

০২। ঘুমের রুটিন বজায় রাখুন ঘুমের পরিবেশ তইরি করুনঃ ঘুমের জন্য একটি রুটিন থাকা চাই। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠতে চেস্টা করা উচিত এবং পাশাপাশি আমাদের ভালো ঘুম এর জন্য অবশ্যই ঘুমের উপযোগী একটি পরিবেশ তৈরী করে নিতে হবে। ঘুমানোর জন্য হালকা ঠান্ডা পরিবেশ খুবই উপযোগী তবে বেশি ঠান্ডা বা বেশি গরম পরিবেশে ঘুমাতে চেস্টা করা একদমই অনুচিত হবে।

০৩। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করুনঃ ঘুমের জন্য উপযোগী পরিবেশের পাশাপাশি ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। ব্যায়াম করলে ভালো ঘুম হয়। তাই দিনের যেকোনো একটি সময়ে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ঘুম সহ নানান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি।

০৪। দিনের বেলায় কম পক্ষে আধা ঘন্টা সূর্যের আলোতে থাকুনঃ ভালো ঘুমের জন্য আমাদের দিনের বেলায় কম পক্ষে আধা ঘন্টা সূর্যের আলোতে থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ন। দিনে সূর্যের আলোতে কিছুক্ষন থাকলে আমাদের ব্রেইন দিন এবং রাতকে সহজেই আলাদা করতে পারে এবং রাতে ঘুমানোর জন্য সহজেই প্রস্তুতি নিতে পারে ফলে আমরা দ্রুত ঘুমিয়ে যেতে পারি।

০৫। চা-কফি কোল্ডড্রিংস বা এনার্জি ড্রিংক, কফি চকলেট এবং সিগারেট না খাওয়াঃ ভালো ঘুমের জন্য আমাদের দৈনন্দিন খাবারের দিকে খেয়াল রাখা জরুরী। ভালো ঘুমের জন্য চা-কফি কোল্ডড্রিংস বা এনার্জি ড্রিংক, কফি চকলেট এবং সিগারেট বা মাদকদ্রব্য সেবন থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

০৬। খালি বা ভরা পেটে ঘুমাতে যাবেন নাঃ অতিরিক্ত খালি পেটে বা অতিরিক্ত ভরা পেটে ঘুমাতে যাওয়া ঠিক না। পেট বেশি ভরা বা বেশি খালি থাকলে আমাদের অস্বস্তি লাগবে এবং ঘুম আসবে না। তাই ঘুমাতে যাওয়ার কিছুক্ষন আগে পরিমিত খাবার গ্রহন করতে হবে এবং কিছুটা হাটাচলা করলে আমাদের ঘুম ভালো হবে।

০৭। ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করাঃ ভালো ঘুমের জন্য আমরা হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারি। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। বেশি গরম বা বেশি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে বিপরীত হতে পারে। তাই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারলে ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভবনা বেরে যায়।

০৮। দুপুরে যদি ঘুম পায় তাহলে সেটা দুপুর দিনটের আগে সেরে ফেলতে হবেঃ আমরা অনেকেই দুপুরে খাবার পরে একটু ভাত ঘুম দেই এতে খারাপ কিছু নেই তবে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে সেই ঘুম যেনো দুপুর তিনটার আগে হয়। তিনটার পরে ঘুমালে রাতে দ্রুত ঘুম আসে না।

০৯। সকালে দ্রুত উঠতে চেস্টা করুনঃ রাতে ঘুমানোর জন্য সকালে দ্রুত ঘুম থেকে জাগা অনেক জরুরী। সকালে ঘুম থেকে জাগলে রাতে দ্রুত ঘুম আসার সম্ভবনা বেশি থাকে। তাই আমাদের রাতে ভালো ঘুমের জন্য সকালে দ্রুত ঘুম থেকে উঠে পরতে হবে।

০। ঘুমের সময় ঘড়ি দূরে রাখুনঃ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমরা অনেকেই হাতের কাছে ঘড়ি রাখি এবং কিছুক্ষন পর পর বার বার ঘড়ির দিকে মনোযোগ দেই এতে করে আমাদের ঘুমে বাধা সৃস্টি হয়। সুতরাং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ঘড়ি থেকে দূরে থাকা চাই।

Leave a Reply