স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে, বাজি-পটকা থেকে উৎপন্ন লেড বা সীসার অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় রক্ত শূন্যতা, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অসাড়তা প্রভৃতি রোগ হতে পারে। অ্যান্টিমনি দূষণের ফলেও অনেকটা এরকম হয়ে থাকে। আর্সেনিক দূষণের ফল দুরারোগ্য চর্ম রোগ (চুলকানি) এবং যকৃতের রোগ হতে পারে।
শরীরবিদদের মতে, আর্সেনিকের বিষক্রিয়া শরীরের প্রভূত ক্ষতি সাধন করতে পারে। ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি ধাতু আমাদের জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়া চালানোর জন্য খুবই প্রয়োজন। একথা সত্য, তবে এদের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে শরীরে দেখা দেয় নানা রকম বিপত্তি। বলা বাহুল্য, আতশবাজি-পটকা থেকে নির্গত ধোঁয়ার সঙ্গে এসব পদার্থ প্রথমে ফুসফুসে যায়। তারপর রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। তাই তখন নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং এতে প্রচুর পরিমাণে, সালফার, পটাশিয়াম নাইট্রেট, লেড ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর পিএম ১০ ও ২.৫ কণা থাকায় ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর, ক্যান্সার হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
আতশ বাজিতে জ্বালানী হিসেবে কার্বন ও সালফার ব্যবহৃত হয়। এগুলো পুড়ে গেলে কার্বন মনোঅক্সাইড, কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাস উৎপন্ন হয়। এগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। মাথাধরা, ক্লান্তি ভাব সহ এবং আরও নানারকম উপসর্গ দেখা দেয়। সালফার ডাই অক্সাইড গ্যাস, শ্বাসনালী এবং ফুসফুসে ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া এ গ্যাস বাতাসে থাকলে তা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে তৈরি করে সালফিউরাস ও সালফিউরিক অ্যাসিড। এসব অ্যাসিড ত্বকের ক্ষতি করে।
আতশবাজির কয়েকটি ক্ষতিকর দিকঃ
- আতশবাজি ফাটানোর ফলে পশুপাখির মধ্যে আতঙ্ক সৃস্টি হয়।
- আতশবাজি ফাটানোর ফলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
- আতশবাজি ফুসফুসের জন্য ক্ষতিকর এবং ক্যান্সার হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
- বাজি-পটকা থেকে উৎপন্ন লেড বা সীসার অক্সাইডের বিষক্রিয়ায় রক্ত শূন্যতা, দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অসাড়তা প্রভৃতি রোগ হতে পারে।
- আতশবাজি-পটকা থেকে নির্গত ধোঁয়ার সঙ্গে বিষাক্ত পদার্থ গুলো ফুসফুসে গিয়ে রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
- সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে শিশু ও বৃদ্ধরা। যারা হার্টের রোগী, যাদের অ্যাজমা আছে কিংবা যাদের স্ট্রোক হয়েছে তাদের জীবন আতশবাজির মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে বুকে ব্যাথাসহ বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
- আতশবাজিতে থাকা বিভিন্ন গ্যাস বাতাসে থাকলে তা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে তৈরি করে সালফিউরাস ও সালফিউরিক অ্যাসিড এবং এসব অ্যাসিড ত্বকের ক্ষতি করে।
- গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিঃ আতশবাজি থেকে নির্গত ধোঁয়া মা ও শিশু উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে। আতশবাজি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় অনেক বিষাক্ত উপাদান থাকে তাই গর্ভাবস্থায় মহিলারা এই দূষণের সংস্পর্শে এলে এই বিপজ্জনক গ্যাসগুলি শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি করতে পারে।