কীভাবে রিডার্স ব্লক থেকে মুক্তি মিলবে?

রিডার্স ব্লক থেকে মুক্তি পাওয়ার অনেক উপায় আছে। তবে সবার আগে যেটা প্রয়োজন সেটা হলো, নিজের মধ্যে বই পড়ব, এই আত্মবিশ্বাস তৈরি করা। কারণ, অনেক দিন রিডার্স ব্লকে আটকে থাকতে থাকতে অনেকের মধ্যেই বই পড়ার সুপ্ত ইচ্ছেটাই মরে যায়। যা করতে দেওয়া চলবে না।

১. জোর করবেন না:
বই পড়ার ক্ষেত্রে প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মনের আনন্দ। যদি বই পড়ার মধ্যে আনন্দই খুঁজে না পান, তবে সেই বই পড়ার কোনো অর্থই হয় না। যদি কোনো বই শুরু করে পড়তে ভালো না লাগে, কিংবা শুরু করতে না করতেই মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন; তবে জোর করে পড়তে যাবেন না। কারণ, জোর করে রিডিং ব্লক কাটানো দূরে থাক, বরং আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। বরং পরবর্তী কোনো সময়ের জন্য বইটি রেখে দিন।

২. ছোটগল্পে মনোযোগ দিন:
অনেক সময় বিশাল বিশাল উপন্যাস পড়তে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠতে পারে আপনার মন। ৫০০ পৃষ্ঠার উপন্যাস তো আর কম কথা নয়! এমন সময়ে বিশাল সাইজের বই সাইডে রেখে ছোটগল্পে মনোনিবেশ করতে পারেন। হতে পারে সেটা রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প কিংবা চাচা চৌধুরী কমিকস। মোটকথা বিশাল পৃষ্ঠার হিসাব সরিয়ে রাখুন। তাতে পড়ার মধ্যে যেমন বৈচিত্র্য আসবে, তেমনই নতুন কিছু পেয়ে মনও উৎফুল্ল হয়ে উঠবে।

৩. অন্য কোনো ধারা চেষ্টা করুন:
কখনো কখনো নিজের পরিচিত গণ্ডির বাইরে চলে যাওয়া পড়ায় মন ফিরিয়ে আসতে সাহায্য করে। একই ধারার কয়েকটি বই টানা পড়তে পড়তে সেই ধারার বইয়ের প্রতি বিতৃষ্ণা আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেই বিতৃষ্ণা কাটাতে অন্য কোনো ধারার বই চেষ্টা করে দেখতে পারেন। দেখা গেল কারও পছন্দ সমকালীন উপন্যাস। কিন্তু সেটি পড়তে পড়তে একঘেয়েমি চলে এলে থ্রিলার কিংবা ফ্যান্টাসি জনরার বই চেষ্টা করে দেখতে পারেন। পড়ার বৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে পারে বই পড়ার পুরোনো প্রেম।

৪. ফিরে যান পুরোনো প্রেমে:
মনে আছে ঠিক কোন বইটি দিয়ে আপনার বই পড়ার যাত্রা শুরু হয়েছিল? কিংবা কোন লেখকের হাত ধরে? তাঁর কাছেই ফিরে যান। পুরোনো সহজ, সুখপাঠ্য বই, যা আপনার নখদর্পণে; সেটি নতুন করে পড়ার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। হাতে তুলে নিতে পারেন হুমায়ূন আহমেদের কোনো উপন্যাস। পুরোনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে বই পড়ার পুরোনো অভ্যাস।

৫. অডিওবুক শুনুন:
অডিওবুককে অনেকেই এখনো ঠিক ‘বই পড়া’ হিসেবে গণ্য করেন না। তাঁদের মতে, অন্যের পড়া বই দিয়ে আসলে বই পড়ার আসল স্বাদ পাওয়া যায় না। কিন্তু রিডার্স ব্লক কাটাতে অডিওবুক খুবই উপযোগী একটি মাধ্যম। কাগজের বই থেকে কানে শোনার বই বই পড়ার স্বাদে আনবে নতুনত্ব।

৬. বিরতি নিন:
এত কিছুর পরও যদি দেখেন বই পড়ায় মনোযোগ ফেরাতে পারছেন না, তবে একটু বিরতি নিন। দু–একদিন বই পড়া থেকে দূরে থাকুন। তবে বইয়ের সংস্পর্শ হারাবেন না। নতুন করে চেষ্টা করুন। মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত বই পড়া মনের ওপর চাপ তৈরি করে, তখন অতি সুখপাঠ্যও অখাদ্য মনে হয়।

রিডিং ব্লকের সূচনা হয় তখনই, যখন বই পড়ে আনন্দ পাওয়ার বদলে বই পড়াটাকে একটা কাজ মনে হয়। বই পড়া কোনো কাজ নয়, বরং মনের আনন্দ। কোনো কিছুর ভেতর থেকে যখন আনন্দ হারিয়ে ফেলবেন, তখন বই পড়া কেন, কোনো কাজই সুখকর বলে মনে হবে না।

সূত্র: মেন্টাল ফ্লস ও গুডরিডস অবলম্বনে.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *